রবিবার, ২৮ মার্চ, ২০১০

অতৃপ্ত প্রতিশোধ-৫ (শেষ পর্ব)

অতৃপ্ত প্রতিশোধ-১
অতৃপ্ত প্রতিশোধ-২
অতৃপ্ত প্রতিশোধ-৩
অতৃপ্ত প্রতিশোধ-৪
অতৃপ্ত প্রতিশোধ-৫
৫.
রতনীকান্ত একটি থলে থেকে গ্লাসভর্তি খেজুরের রস নিয়ে তাপস বাবুর দিকে এগিয়ে দিল। তাপস বাবু সেটা হাতে নিয়ে বললেন, “বাড়িটা অভিশপ্ত হওয়ার ঘটনাটা একটু খুলে বলবে?”
রতীকান্ত গলা খাকাড়ি দিয়ে বলা শুরু করল। “আজ থেকে প্রায় দেড়শ বছর আগে এই বাড়িটা ছিল এলাকার প্রভাবশালী রায় পরিবারের। নাম রায়বাড়ি। তথাকথিত রাজা না হলেও এই এলাকার শাসনভার তাদের দ্বারাই নিয়ন্ত্রিত হত। প্রচুর প্রভাব-প্রতিপত্তি ছিল তাদের। কথা বলার ফাকেঁ স্যাঁতস্যাঁতে মেঝের দিকে তাকাতেই দেখি হলুদ ধোরা সাপটা পাশের ঘর থেকে বের হয়ে কিলবিল করে আমাদের দিকে এগিয়ে আসছে ধীরে ধীরে। তখন রতীকান্ত হাত দিয়ে বিশেষ কায়দায় ইশারা করতেই সাপটা উল্টাদিকে গলে বেরিয়ে গেল। বুঝা গেল সাপটাকে পোষ মানিয়ে ফেলা হয়েছে।


রতীকান্ত আবার বলতে লাগল, তারা ছিল দুই ভাই, প্রতাপ রায় আর প্রদীপ রায়। দুই ভাইয়ের মধ্যে সবসময় বিরোধ লেগেই থাকত। বয়োজৌষ্টতার হিসেবে প্রতাপ রায়ের উপর এলাকার শাসনভার বর্তায়। যা স্বার্থলোভী ছোটভাই প্রদীপ রায় কখনই মেনে নিতে পারেনি। সে অযোচিতভাবে ক্ষমতার মসনদে আরোহন করতে চেয়েছিল সবসময়। একসময় রায়বাড়ির ঘর আলো করে আসল প্রতাপ রায়ের প্রথম পুত্রসন্তান সৌরভ রায়। রায় পরিবারে আনন্দের বন্যা বয়ে যেতে লাগল তখন। তার দু’বছর পর এলাকায় কোন এক কারনে ভয়াবহ মহামারী দেখা দিল। ঘরে ঘরে অজানা এক রোগে মানুষ মারা যেতে লাগল। বাতাসের বেগে ছড়িয়ে যেতে লাগল এই মহামারী রোগটি। এক সাধুবাবা ওই বিশেষ সময়কে অভিশপ্ত হিসেবে ছড়াতে লাগলেন তখন। কিছুদিনের মধ্যে প্রতাপের প্রথম স্ত্রী আবারও সন্তানসম্ভবা। একদিন রাতে প্রতাপ রায় স্বপ্নে দেখলেন যে একটি কুয়ো কেটে কিছুক্ষনের জন্য তার আগত নবজাতককে কুয়োর নিচে শুয়ে রাখলে গ্রামের বর্তমান অভিশাপটি কেটে যাবে। গ্রামের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে স্ত্রীর অনেক আহাজারী উপেক্ষা করলেন প্রতাপ রায়। ফুটফুটে নবজাতক হওয়ার পরের দিনই কুয়ো কাটা হল কালীমন্দিরের ঝোপের পাশে। কুয়ো কাটার পর কোন এক রহস্যজনক কারনে পানি উঠছিল না কুয়োতে। তারপর নিষ্পাপ নবজাতককে নামানোর কিছুক্ষন পরই প্রবল বেগে পানি এসে উপছে পড়ল কুয়োটি। কুয়োর পানি এতই প্রচন্ড বেগে ধেয়ে আসতেছিল যে কোনভাবেই শিশুটিকে আর বাঁচানো গেল না। পরে শিশুটির নিথর দেহটি পানিতে ভেসে উঠল কুয়োর উপর। পরে স্বপ্নের আশিষটাই সত্যি হতে লাগল গ্রামে। গ্রামের মহামারীটি কালিমার কৃপায় দুর হতে লাগল ধীরে ধীরে। আর নতুন কোন মরার খবর আসল না। আবার ঘরে ঘরে মানুষ সুখে দিন কাটাতে লাগল। শুধু রায় পরিবারে রয়ে গেল তাদের সন্তান হারানোর অসহ্য যাতনা আর শুন্যতার দীর্ঘশ্বাস।

গ্রামের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে প্রতাপ রায়ের সন্তানবিসর্জন গ্রামের মানুষদের কাছে প্রতাপ রায়ের গ্রহনযোগ্যতা আরো বাড়িয়ে দিল। কিন্তু সেই বাড়তি গ্রহনযোগ্যতা ছোট ভাই প্রদীপ রায়ের কাছে প্রবল ঈর্ষার কারন হয়ে দাড়াল। প্রদীপ রায় তখন ছলে বলে তার অবৈধ জিঘাংসা হাসিলের জন্য উঠে পড়ে লাগল। সে সুযোগ খুজতে লাগল যে কোন উপায়ে বড় ভাইকে ক্ষমতার সমনদ থেকে নামিয়ে দেওয়ার। দু:খজনকভাবে সুযোগও আসতে লাগল ধীরে ধীরে। একদিন প্রতাপের স্ত্রী কুয়োর ধারে বসে সৌরভকে স্নান করাচ্ছিলেন। ওত পেতে থাকা প্রদীপ বড় একটা শক্ত ঢিল ছুড়ে মারল প্রতাপের স্ত্রীর মাথার উপর। প্রচন্ড রক্তক্ষরন হতে লাগল সাথে সাথে। প্রদীপ কালক্ষেপন না করে প্রতাপের স্ত্রীর নিস্তেজ দেহটি কুয়োতে ফেলে দিয়ে রটালো কুয়োতে পরে মারা গিয়েছে প্রতাপের বৌ। সাত বছরের সৌরভ ফ্যালফ্যাল তাকিয়ে দেখল সব। তারপর থেকে সৌরভের দেখাশোনার ভার বৃদ্ধ কেয়াটেকার মতিবাবুই নিল। সফল হয়ে প্রদীপ একই উপায়ে প্রতাপকে হত্যা করার পরিকল্পনা করতে লাগল তারপর। আর এদিকে বৌ-সন্তানকে হারিয়ে পাগলের মত হয়ে গিয়েছিল প্রতাপ রায়। অপ্রকৃতস্তের মত প্রলাপ বকত সবসময়। সেই অসহায় সানুষকেও বাচঁতে দিল না ছোটভাই নরলোভী প্রদীপ। একদিন সুযোগ বুঝে কুয়োয় ধারে কর্মরত প্রতাপকে পেছনদিক থেকে ঢিল মেরে কুযোতে ফেলে দিল প্রদীপ। আর মুহুর্তেই সে পেয়ে গেল রায় বংশের সব ক্ষমতা। সেই ক্ষমতা পেয়েও সে থেমে ছিল না। রায় বংশের ভবিষ্যৎ মসনদ দাবীদার প্রতাপের বড় ছেলে সৌরভকেও মেরে ফেলার জন্য উঠেপড়ে লাগল প্রদীপ রায়। পরিস্থিতি আন্দাজ করতে পেরে সৌরভের কেয়ারটেকার মতিবাবু সৌরভকে নিয়ে পালিয়ে গেল গ্রামের পাশের একটি নির্জন অরন্যে। সেখানে তিল তিল করে সৌরভকে বড় করতে লাগল মতিবাবু। কিন্তু সেই গহীন অরণ্যেও সৌবল রেহাই পেল না হিংস্র প্রদীপের দুষ্ট নখর থেকে। বছর কয়েক পর প্রদীপ ঠিকই খুজে বের করে নিল সৌরভকে। তাকেও নৃশংসভাবে হত্যা করে কুয়োর পানিতে ফেলে দিল সে।
তারপর কয়েকবছর প্রদীপ রায় গ্রামের নিরীহ মানুষদের উপর শাসনের নামে নীপিড়ন, অমানুষিক অত্যাচার চালাতে লাগল। এভাবেই এক সময় রায়বাড়ি অভিশপ্ত বাড়ি হয়ে উঠল সবার কাছে। একসময় গ্রামের মানুষ ধৈর্য্যহারা হয়ে ক্ষেপে উঠল। এক হয়ে লড়াই করে গ্রামছাড়া করল রায় পরিবারের সবাইকে। তারপরে আমার দাদা বৃদ্ধ কেয়ারটেকার মতিবাবুকে বাড়ির দেখাশোনার দায়িত্ব দিল তারা। এভাবেই সমাপ্তি হল এই রায় বাড়ির ঘৃন্য ইতিহাস একসময়।
লোকটি থামলে হতভম্বের মত কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকলেন তাপস বাবু এই পুরো বাড়িটির দিকে। এই বাড়িতেই দেড়শ বছর আগে এতগুলো খুন হয়ে গেল। তিনি কোনভাবেই বিশ্বাস করতে পারছেন না। ভাবতেই গায়ের লোম খাড়া হয়ে যাচ্ছিল তাপস বাবুর।

খেজুরের রসে শেষ চুমুক দিয়ে তাপস বাবু রতীকান্তকে জিজ্ঞেস করলেন্, “শুভ্রদের বাড়িটা কোনদিকে? সে একটু যেতে চায় তার বাড়ি”।
“কোন শুভ্র? শুভ্র রায়?” পাল্টা প্রশ্ন করল রতীকান্ত।
তাপস বাবু বললেন, “হুমম”।
রতীকান্ত বলল, “সেইতো সৌরভ রায়, প্রতাপ রায়ের বড় ছেলে যাকে প্রদীপ রায় সবার শেষে নৃশংসভাবে হত্যা করল। গায়ের রং ধবধবে ফর্সা ছিল বলে দাদীমা “শুভ্র” নাম রেখেছিল।”
হয়তো প্রশ্ন ঠিকমতো বুঝতে পারে নাই ভেবে তাপস বাবু আবার কিছু বলতে যাচ্ছিলেন, এমন সময় রতীকান্ত বলতে লাগল, “ছেলেটার বাম গালে ছিল একটি আকাঁবাকাঁ কাটা দাগ। ছোটবেলা বড় একটা ধার কাঠের মূর্তিতে উপর পড়ে গিয়ে কেটে গিয়েছিল এর কচি গাল। এই কাটা দাগে অনিন্দ্যসুন্দর সৌরভকে আরও সুন্দর লাগত বলে সবাই বলাবলি করত। মারা যাওয়ার আগমুহুর্ত পর্যন্ত সে সবসময় একটি মাঝারি কালো পাথর নিয়ে ঘুরে বেড়াত। একমাত্র সেই তার পিতামাতার হত্যার নীরব সাক্ষী ছিল। তাদের দুজনকেই পাথরের ঢিল ছুড়ে মারা হয়েছিল। তাই হয়তো সে পাথর সাথে রাখত প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য।”

মুহুর্তে তাপস বাবুর গা কাপঁতে লাগল। এত বড় বিস্ময়সাগরে বোধ হয় আর পরেননি কখনও তাপস বাবু। তাহলে কি শুভ্র……? গলার স্বর আটকে যেতে লাগল তাপস বাবুর। কেয়ারটেকার আরও কি কি বলছিল, কিছুই আর কানে ঢুকছে না তাপস বাবুর। একটি অদ্ভুত ঘোরের মধ্যে ছিলেন তিনি। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছিল তখন। রতীকান্ত নিজেই বাড়ি ফেরার জন্য অস্থির হয়ে উঠছিল। ফেরার আগে অভিশপ্ত বাড়িটির দিকে আবার তাকিয়ে থাকলেন কিছুক্ষন। অন্যমনস্ক হয়ে গেলেন কিছুক্ষনের জন্য। বাড়ির পেছনদিকটার ঘরে কালো ধোরাটিকে কিলবিলিয়ে আবার বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করতে দেখলেন।
রতীকান্ত পরে এই সন্ধ্যায় নিজে তাপস বাবুকে বাড়ি পৌছে দিলেন আর যাবার সময় একবার তার বাড়িতে পদধুলি দেওয়ার জন্য নেমন্তনও দিয়ে গেলেন।

তাপস বাবু বাসায় এসেও একটা ঘোরের মধ্যে থাকলেন। মাথায় শুধূ শুভ্রর বলা কথাগুলো একে একে ঘোরপাক খাচ্ছে। আজ পূর্ণিমা। আজ শুভ্রর আসার কথা। তিনি টেবিলের ধারে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে লাগলেন শুভ্রর জন্য। জানালা দিয়ে প্রবল বাতাস আসছে। শ্রাবন মাস। বৃষ্টি-বাদলের মাস। তবু এবার ঝড়-ঝাপ্টা একটু বেশিই অনুভুত মনে হচ্ছে। বাতাসের প্রবল ঝাপটায় জানালার ডালা বার বার ধাক্কা খাচ্ছে পাশের দেয়ালটিতে। শুভ্র আসতে পারে ভেবে জানালাও বন্ধ করছেন না তাপস বাবু। তাপস বাবুর মনে পড়ল শুভ্র আজ তার জন্য একটি উপহার নিয়ে আসবে বলেছিল। আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখলেন বড় থালার মত বড় চাদঁ উঠেছে আজ। চাদেঁর ম্লান আলোয় চারিদিকে কেমন গা ছমছম করা ভুতুরে পরিবেশ। অনেক রাত হয়ে গেল। না, শুভ্র আসেনি। মনে পড়ল শুভ্রর একটি কথা: “আমি কারো অতি আগ্রহে দেখা দেই না”। তাহলে কি সে আর আসবে না আর। এইরকম চিন্তা করতে করতেই তাপস বাবু একসময় গভীর ঘুমের রাজ্যে তলিয়ে গেলেন।

ঘুম ভাঙ্গল পরিমলের প্রবল দরজা ধাক্কানিতে। বিছানা থেকে উঠে দরজা খুলে দিলেন তাপস বাবু। দরজা খুলামাত্রই পরিমল তাপস বাবুর পায়ে লুটিয়ে পড়ল। বাবু, আপনি আমার বড় উপকার করলেন, বাবু। চেয়ারম্যন সাব কাল সন্ধেবেলা আমাকে ডেকে নিয়ে আমার বন্ধকী বাড়িটি ফিরিয়ে দিয়েছেন গো, বাবু। আপনি আমার বড় উপকার করলেন গো, বাবু।

অনেক কষ্টে বিগলিত তাপস বাবু পরিমলের হাতখানা ছাড়িয়ে আনলেন নিজের পা-যুগল থেকে। সকালের প্রাত্যাহিক কাজ সেরে জানালার ধারে টেবিলের দিকে তাকাতেই তাপস বাবুর গা মোচর দিয়ে উঠল। গায়ের রক্ত হিম হয়ে গেল। টেবিলের উপর একটি মাঝারি কালো পাথর রাখা। তাহলে কি কাল গভীর রাতে এসেছিল শুভ্র। এটাই কি তার সেই উপহার? এটাই কি সে মারা যাওয়ার আগ মুহুর্ত পর্যন্ত সাথে নিয়ে ঘুরে বেড়াত তার পিতা-মাতার হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য। তাপস বাবুর মাথা ঝিমঝিম করতে লাগল। তাহলে কি শুভ্র তার অতৃপ্ত প্রতিশোধের ভার তার উপর দিতে চাচ্ছে নিজে ব্যর্থ হয়ে? তার অতৃপ্ত আত্মা কি তার নিজস্ব প্রতিশোধের জ্বালা আরেকজনের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে? যাতে করে সেই প্রতিশোধের জ্বালা জিইয়ে রাখা যায় যুগ থেকে যুগান্তরে। কিন্তু, এ কি করে সম্ভব? কিছুই চিন্তা করতে পারছেন না তাপস বাবু। সবকিছু খুব এলোমেলো লাগছে তাপস বাবুর কাছে। কিছুই গুছিয়ে ভাবতে পারছেন না তাপস বাবু।

তারপর অনেক রাত অবধি জেগে থাকলেন শুভ্রর অপেক্ষায়। কিন্তু আর কোনদিন আসেনি শুভ্র। হয়তো আর কখনও আসবেও না।

ফিরে যাবার সময় চলে এসেছে তাপস বাবুর। আজই চলে যাবেন। পরিমল অনেক পিঠাপুলি ভরা একটি থলে ধরিয়ে দিলেন তাপস বাবুর হাতে। সেগুলো নিয়েই বের হলেন তাপস বাবু্। যাবার আগে কুয়োতে শুভ্রর দেওয়া পাথরটি ফেলে দিয়ে গেলেন। এবং কুয়োর গভীর টলটলে পানির দিকে আনমনে তাকিয়ে থাকলেন অনেকক্ষন। মনে মনে বললেন, শুভ্র, ক্ষমা কর, পারলাম না তোমার অতৃপ্ত আত্মাকে তৃপ্ত করতে, আমি অপারগ। সেটা যে আমার ক্ষমতার বাইরে।
আসার আগে শেষবারের মত আবারও তাকিয়ে দেখলেন বাড়িটা কিছুক্ষনের জন্য। এখনও কি সুন্দর ঠাঁয় দাড়িয়ে আছে পরিত্যক্ত অভিশপ্ত এই বাড়িটা। হয়তো বয়সের চাপাকলে আরও কয়েক বছর পর সবই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। কোন অবশিষ্টই হয়তো থাকবে না। শুধূ পড়ে থাকবে কুয়োর টলটলে পানির মধ্যে মিশানো একটি অতৃপ্ত আত্মার অতৃপ্ত প্রতিশোধের প্রবল তৃষ্ঞা।

পরিশিষ্ট: এর একবছর পর তাপস বাবু শুভ্রকে নিয়ে একটি উপন্যাস লিখলেন। নাম দিলেন: “প্রতিশোধের পাথর”। তাপস বাবু জানতেন, শুভ্রর চাপিয়ে দেওয়া দয়িত্ববার বহন করার ক্ষমতা হয়তো তার নাই। তাই নিজেকে অপরাধীও ভাবতে লাগছিলেন তাপস বাবু। কিন্তু এটাও জানতেন শুভ্র তার অতৃপ্ত প্রতিশোধকে ছড়িয়ে দিতে চেয়েছিল সামর্থ্যবানদের উপর। তাপস বাবু সামর্থ্যহীন হয়ে নিজে ব্যর্থ হলেও গল্পের মাধ্যমে অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষীন চেষ্টাতো করলেন। এতেও যদি কিছুটা তৃপ্তি পাওয়া যায় একটি অতৃপ্ত আত্মার অর্পিত দায়িত্ব পালনের।

(শেষ)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন