শনিবার, ৮ জানুয়ারী, ২০১১

ছবিব্লগ: স্বপ্নবাহুল্য ভ্রমনবিলাস

যেসব চরম চরম জায়গায় ঘুরাঘুরি করব বলে ঠিক করে রেখেছি, আজ সেগুলো সবার সাথে শেয়ার করতাছি। দেখেন দেখিনি কেমুন লাগে!

ডিসক্লেইমার: পড়বেন, দেখবেন, শুনবেন, বাট টিটকারী মারতে পারবেন না।

স্বপ্নবিলাস ১. এভারেস্টে বইসা বইসা সূযোর্দয় দর্শন:

আমার প্রথম এবং অন্যতম কাঙ্খিত স্বপ্ন হইল নিচের ছবিটিতে দ্রষ্টব্য এভারেস্টে পিকে আমার পদধূলিখান দেওয়া, তখন সময়টা থাকবে গোধূলিবেলা, সূর্যটা প্রায় ডুবি ডুবি, ম্লান লাল আভা ছড়িয়ে থাকবে চারদিকে, আমার হাতে ধরা থাকবে একটা ঝালমুড়ির প্যাকেট (কোকলা ব্র্যান্ডের হইলে ভাল হয়), আমি তখন চূড়ায় একটু ঢিগ দিয়ে বসে থাকব আর উপর থেকে ডুবন্ত সূর্যের দিকে অনেকক্ষন মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকব। কিতনা সুন্দর ফিলিংস হবে হতে পারে ভাইবা দেখেন?

দি হাইয়েস্ট চূড়া (লাল কালার) অব দ্যা এভারেস্ট
দি চূড়া (লাল কালার) অব দ্যা এভারেস্ট

ছবির বামের পর্বতটার নাম শুনছি অন্নপূর্ণা। ওইখানে যাওনের আপাতত কোন ইচ্ছা নাই, যামুই যখন, ছোটিমুটি না, একেবারে হাত্তির ডেলায় উঠুম গো। কানাঘুষা শুনতেছি, মুসা সাহেব নাকি তার এভারেস্ট-জয়ের প্রমাণ সো করতে তালবাহানা করতাছেন। এই সুযোগ-টাও কাছে লাগানো যায়। ফাঁকতালে পিকে উঠে এই খ্যাতাবটাও ইজিলি নেওন যায়। রথও দেখা হইল, আবার কলাও ব্যাচা হইল। আপনারা শুনে আরও খুশি হইবেন যে, আমি এ ভ্রমনের ব্যাপারে অনেকদুর আগাইয়াও গেছি। কাল রাত্রিতে গুগল ম্যাপ থেকে এভারেস্ট বেসক্যাম্পের একটা পাতা প্রিন্ট পর্যন্ত করে রেখে দিয়েছি। বুঝেন অবস্থা! এখন শুধূ দিনক্ষন ঠিক করনের পালা।

স্বপ্নবিলাস ২. ওয়াচিং দি ধরনী ফ্রম চান্দের মাটি:

এটা আমার অনেকদিনের একটা খায়েস। চান্দে হাইটা হাইটা পৃথিবী দেখুম। সারা পৃথিবীটা এক সাথে দেখতে কেমুন লাগে একবার দেখুম। এর থেকে মনোহর দৃশ্য আর কি হতে পারে! চান্দের মাটিতে দু'তিনরাত বিছানা পেতে ঘুমানোরও ইচ্ছা আছে। মনে মনে অনেকদুর ধরে প্রিপারেশনও নিয়ে রাখতাছি। চান্দে বাতাস-টাতাস নাই শুনেছি। রিস্ক নিয়ে লাভ নাই। কলে কলে তাই সময় সুযোগ পাইলেই কম শ্বাসে কেমনে বেশিক্ষুন থাকন যায় সেটা অনুশীলন করে রাখতাছি। সময় থাকতে সব ট্রেনিং নিয়ে রাখা দরকার। বলা যায় না, কখন হুট করে সুযোগ চলে আসে! চান্দে রাস্তা-ঘাট চিনতে একটু প্রবলেম হইতে পারে। এখানে গুগলের জিপিএস সিস্টেম খাকবে তো বলে মনে হয় না, দেখি কি করন যায়। একটা কিছু বের করতে তো হবে। যাব যখন ঠিক করে রেখেছি, অল্টারনেটিভ দেখে টেকে রাখাই ভালু।

চন্দ্রালোকে থাইকা ধরনী দর্শন
ওয়াচিং দি ধরনী ফ্রম চান্দের মাটি



স্বপ্নবিলাস ৩. আমাজনে জোৎস্না-স্নান:

কবিগুরুর ভাষায়, “আজি জোস্না রাতে সবাই গেছে বনে”। সো ভরা জোস্না রাতে বনে যেতে হয়, এটাই নিয়ম। আর বন/জঙ্গল হিসেবে আমাজনটাই চুজ করে নিলাম। জঙ্গলটা খারাপ না, তাছাড়া বেশ বড়সড়ও আছে। যাওন যায় এখানে। বড়সড় জঙ্গলে ঢুকে জোৎস্না দেখার মজাই আলাদা হওনের কথা। ভরা চাঁদনি পসর রাইতে গভীর আমাজনে ঢুইকা গাছের উপর বসে বসে জোৎস্না স্নান করতে যে কেমন ভাল লাগবে, এটা চিন্তা করতেই তো আমার গা রিরি করতে আছে।

এইডারে কয় আমাজন জঙ্গল
এই দেখেন আমাজন জঙ্গল



স্বপ্নবিলাস ৪. টাইটানিকের সমাধিস্থল পরিদর্শন::

ছোটবেলায় ক্যামেরুন সাহেবের সিনেমাটা যখন দেখলাম তখনই মনে মনে ঠিক করে রেখে দিয়েছিলাম, এখানে একবার যাওন যায়। সিদ্ধান্তটা ফাইনাল করে রেখে দিয়েছিলাম তখনই। ছোটবেলার শখ অনেক বড় ব্যাপার। যেকোন মূল্যে এটা রক্ষা করার চেষ্টা করা উচিত। একটা সাবমেরিন দিয়ে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের চারদিকে শুধূ একটিবার ঘুরব, এইই, আর তো কিছু না। আমার বড় প্রিয় শখ এটি। ইতিমধ্যে নেট-ফেট ঘাটাঘাটি করে যা জানলাম, ধ্বংসাবশেষটি নাকি এখন প্লাসিড প্লেসে আসে, সমুদ্রপৃষ্ট থেকে প্রায় ৭,০০০ ফিট গভীরে। ইউএসের পেনসিলভ্যানিয়া নেভি সেকশান থেকে ‘অথলডি’ নামে একটা সাবমেরিন যায় সেখানে। এটা দিয়ে একবার ট্র্রাই মারন যায়। ইউএস যেহেতু, সাবমেরিনডা তো ভাল কোয়ালিটির হওনের কথা। পানির এত নিচে যামু যখন, দেখে শুনে বুঝে যাওন দরকার। আমি আবার সাঁতারও জানি না, কখন কি হয়, কওন তো যায় না!

টাইটানিক
এইডারে কয় টাইটানিক জাহাজ



পরিশিষ্ট:

আপাতত এগুলুই ঠিকঠাক করে রেখেছি। পরে সময় সুযোগ মত পরিমার্জন বা পরিবর্ধন হতে পারবেক। একটু তাড়াতাড়িই ভ্রমন শুরু করে দিমু ভাবতাছি। তবে এখনি বেরুনোটা মনে হয় ঠিক হবে না। সর্দি কাশির্র সিজন, কদিন যাক। তারপর ঝাপাইয়া লাগুম। আপনাদের দোহাত-মেলা দোয়া/আর্শীবাদ লাগবেক। সময় মত ভরাইয়া দিয়েন (আর ডিসক্লেইমারের কথা ভুলে যাইয়েন না কইয়া দিলাম)।

আরেকটা বাকি আছে, সেটা সিরিয়াস:

সবারই নানারকম শখ থাকে। আমারও আছে। তার মধ্যে একটা হল মরনকালীন শখ। আয়োজন করে মৃত্যকে উপভোগ করার শখ। আমি যখন মারা যাব, ঠিক তখন আমি চাই আবহ সঙ্গিত হিসেবে নিচের গানটা বাজুক। তখন থাকবে গভীর রাত। ঘরের সকল দরজা-জানালা খোলা থাকবে। বাতাসে পর্দা উড়তে থাকবে। ঘরে থাকবে শুধু একটি আধো-জ্বলা মোমবাতি। সেই মোমবাতির ম্লান আলোয় সবকিছু আবছা দেখা যাবে। সেদিন যদি হয় পূর্ণিমার রাত, তাহলে তো সোনায় সোহাগা। জোৎস্নার আলো উপছে পড়বে আমার বিছানায়। আমার দূর্বল শরীর স্নান করব সে আলোয়। সে স্নানে ধুঁয়ে-মুছে যাবে আমার সকল অপ্রাপ্তি, অতৃপ্তি। সেই বিছানার ধারে শুধু আমার একজন প্রিয় মানুষ বসে আমার মাথায় পরম মমতায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকবে। তার ভালবাসার চোখের পানি আমার গালে টপটপ করে পড়তে থাকবে। জানালার ধারে ঝুলতে থাকবে একটি পাখির খাঁচা। বাইরে অনুচ্চস্বরে চাঁপাকান্না শোনা যাবে। তখন হুহু করে বাতাস বইতে থাকবে। একটু শীত শীতও করবে। ঠিক তখন আমার প্রানটা উড়ে চলে যাবে পরপারে। আর আমার প্রানটা যাওয়ার সময় খাঁচা থেকে পাখিটি মুক্ত করে দেওয়া হবে।

[বি:দ্র: তবে মনে করে ভাল করে যেন ঘরে এরোসোল স্প্রে করে দেওয়া হয়, যে হারে মশা বাড়তাছে, যেকোন সময় পুরা আনানন্দটাই মাটি করে দিতে পারে!!]

::::: Fazlur-Rahman-Babu---Shonai-Hay-Hayre-(Monpura-Soundtrack:::::::

গানটা ভাল লাগলে জানাবেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন